বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
কলাপাড়ায় পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সমাবেশ কলাপাড়ায় নানা আয়োজনে বিশ্ব শিশু দিবস পালিত পটুয়াখালীতে (অবঃ) পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় জমি দখলেরঅভিযোগ জিয়া মঞ্চ বাবুগঞ্জ উপজেলার কর্মী সভা অনুষ্ঠিত গলাচিপায় খাদিজা হত্যার পলাতক আসামি গ্রেফতার কলাপাড়ায় মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি’র কোষাধ্যক্ষ বাউফলে ইউএনও’র” অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ বরিশালের বাবুগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড যত দ্রুত সম্ভব বর্তমান সরকার একটি নির্বাচন দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করবে-” মেজর (অব.) হাফিজ পটুয়াখালীতে সরকারি প্রসিকিউটর (জিপি) হলেন এ্যাড,আব্দুল্লাহ ইউসুফ কলাপাড়ায় কৃষক সমিতির মানববন্ধন ও সমাবেশ বাউফলে ইউএনও’র বিচারের দাবীতে মানববন্ধন কুয়াকাটা সৈকতের পাবলিক টয়লেট থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার শ্রমিক ট্রান্সপোর্টের উদ্যোগে মুনাজাত অনুষ্ঠিত শোক সংবাদ। কলাপাড়ায় সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল মালেক শিকদার আর নেই
খোঁড়াখুঁড়ির ভোগান্তিতে বছর পার

খোঁড়াখুঁড়ির ভোগান্তিতে বছর পার

Sharing is caring!

খোঁড়াখুঁড়ির ভোগান্তিতে বছর পার

নিষ্কাশন নালা সংষ্কারের কাজে বছর ধরে খোঁড়াখুঁড়ির যন্ত্রণা পোহাচ্ছেন গোড়ান ও এর আশপাশের এলাকাবাসী।

স্থানে স্থানে গর্ত খোঁড়ার পাশাপাশি কোথাও কোথাও পাইপসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ফেলে রেখে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ, কোথাওবা গর্ত খুঁড়ে সেভাবেই ফেলে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন।

গর্ত খুঁড়ে তুলে রাখা মাটি বৃষ্টির পানিতে মিশে সড়কজুড়ে সৃষ্টি করেছে কাদাপানির রাজত্ব। ফলে সিটি করপোরেশনের এ ‘উন্নয়নের অত্যাচার’ বর্ষা মৌসুমে এসে গোড়ান ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিটি করপোরেশনের কর্তারা অবশ্য এজন্য আর ঠিকাদার কোম্পানির ‘উদাসীনতা’কে দায়ী করেছেন।

তারা বলছেন, একসঙ্গে অনেক কাজ করার দায়িত্ব নেওয়া ঠিকাদারি কোম্পানির ‘অদক্ষতায়’ এলাকাবাসীকে সাময়িক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান মেলার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ‘ফাইভ জোন’ প্রকল্পের আওতায় গোড়ান, বাসাবো, মেরাদিয়া ও মুগদায় পানি নিষ্কাশন নালা বসানো, সড়ক ও ফুটপাত উন্নয়নের কাজ দিয়েছে নাওয়াল কনস্ট্রাকশনস নামের  এক ঠিকাদার কোম্পানিকে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। পানি নিষ্কাশনের নালা বসাতেই রাস্তায় চলছে খোঁড়াখুড়ি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পূর্ব গোড়ান বায়তুন নূর জামে মসজিদ থেকে আদর্শ গলির সামনে পর্যন্ত রাস্তার অধিকাংশ অংশই খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এখনো সেখানে পাইপ বসানো হয়নি।

বিরাট গর্ত করে রাখা হয়েছে বায়তুন নূর জামে মসজিদের সামনে। সড়কের এ অংশ দিয়ে রিকশা ছাড়া কোনো যানবাহন চলতে পারে না।

বাড়ির সামনের রাস্তা খুঁড়ে রাখায় মাসখানেক ধরে ‘কার্যত বন্দি’ অবস্থায় আছেন পূর্ব গোড়ান আদর্শ গলির বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মাসুম।

তিনি বলেন, “গর্তের কারণে গত একমাস ধরে বাসায় গাড়ি নিয়ে ঢুকাতে পারি না। পাশের এলাকায় আরেক গ্যারেজে গাড়ি রেখে আসি।”

একই অবস্থা আদর্শ গলির বাসিন্দা রবিনের। ‘বাধ্য হয়ে’ কয়েকদিন আগে নিজেরাই ‘লেবার ডেকে’ গর্ত ভরাট করিয়েছেন।

একই এলাকার ৮ নম্বর গলির পরিস্থিতি আবার ‘ভিন্ন’। সেখানে নালা বসিয়ে গেলেও ঠিকাদার কোম্পানি খুঁড়ে রাখা গর্ত আর ভরাট করেনি। গর্তের তুলে রাখা মাটি বৃষ্টির পানিতে মিশে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে এলাকাবাসীর।

“আগে গর্ত ছিল, গাড়ি না চলুক, তাও কোনরকমে হাঁটা যেত। মাসখানেক ধরে কাদামাটির কারণে হাঁটতেই পারি না। খুব সমস্যা হয়,” বলেন পূর্ব গোড়ান উত্তরপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস।

একই এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ জানান, গোড়ানের অধিকাংশ সড়কে পাইপ বসানোর কাজ চলছে বছর ধরে।

“আগেতো ১/২টা রাস্তায় সমস্যা ছিল, এখন কোনো রাস্তাতেই যাওয়া যায় না। রাস্তা ছোট হয়ে যাওয়ায় গাড়ি ঢোকে না, রিকশারও কষ্ট হয়। মানুষজন বাধ্য না হলে ওইসব রাস্তায় যেতে চায় না।”

সড়কগুলো ‘বন্ধ থাকায়’ বর্জ্য অপসারণেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

“ময়লার ভ্যান আসতে পারে না, বাসা থেকে ময়লাও নেয় না। ভ্যানওলাদের অতিরিক্ত টাকা দিলে তারা আসে। নইলে আমরাই দূরে গিয়ে দিয়ে আসি।”

পূর্ব গোড়ান আদর্শবাগ এলাকার বাসিন্দা সুভাষ চৌধুরী জানান, শিগগিরই যে সড়কের এ অবস্থার অবসান হবে- সে লক্ষণও তারা দেখছেন না।

“সিটি করপোরেশন পাইপ বসিয়ে গেলেও রাস্তা ঠিক করেনি। এখন আবার ওয়াসার পাইপ বসানোর জন্য রাস্তা কাটা হচ্ছে। আমাদের ভোগান্তি কবে শেষ হবে জানি না।”

গোড়ানের লাগোয়া মাদারটেকের পরিস্থিতিও প্রায় একই। সেখানে বেশিরভাগ রাস্তায় নিষ্কাশনের নালা বসানো হলেও রাস্তা মেরামত হচ্ছে না কয়েক মাস ধরে।

বাসিন্দারা সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে বার বার ধর্ণা দিলেও সেখানে থেকে ‘একসঙ্গে সব রাস্তা’ ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।

“বাড়ির সামনে যেন একেকটা কবর খুঁইড়া রাখছে। আর আমাদের মূলা দেখাচ্ছে- একবারে  নাকি সব রাস্তা মেরামত করে দিবে,” বলেন উত্তর মাদারটেকের ১৯ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা ব্যবসায়ী ওসমান গণি।

এ অভিযোগগুলো নিয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদেরের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বললেন, আপাতত ভোগান্তি হলেও নাগরিক সুবিধার স্বার্থেই নিষ্কাশন পাইপ বসানোর কাজ শেষ করতে হবে।

“আমার কাছেও এলাকার অনেকে কমপ্লেইন করেছে। কিন্তু এ কাজ শেষ করতে সময় লাগবে।”

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল্লাহ বর্ষারসময়ে রাস্তা খোঁড়াখুড়ির কথা জানতেন না বলে জানান।

“জুন থেকে অগাস্ট এই তিন মাস তো কোনো খোঁড়াখুঁড়ি করার কথা না। এ সময় কেউ রাস্তা খুঁড়লে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

যেসব সড়ক ‘এখনও খুঁড়ে রাখা হয়েছে’ সেগুলো দ্রুত মেরামত করে চলাচল উপযোগী করারও আশ্বাস দেন তিনি।

নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, একটি প্যাকেজের আওতায় একসঙ্গে কয়েকটি এলাকার কাজনিলেও শ্রমিক সঙ্কটে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারছেনা ঠিকাদার।

“এখন উন্নয়ন কাজের মৌসুম বলে শ্রমিক সঙ্কট আছে। ঠিকাদার একেক এলাকায় একটু একটু করে কাজ করছে। অদক্ষতাও রয়েছে। তাই এ অবস্থা তৈরি হয়েছে,” বলেন এক কর্মকর্তা।

‘অদক্ষতা’র অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নাওয়াল কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি মো. ফারুক হোসেন দাবি করেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়া শ্রমিকরা ফিরলেই পুরোদমে কাজ শুরু হবে।

“শ্রমিকরা আসতে দেরি করছে বলে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তারা এলে ঠিক সময়েই কাজ শেষ হবে। এজন্য আরও একমাস সময় লাগতে পারে,” বলেন তিনি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD